preloader

ফ্রিল্যান্সিং কি রাতেই করতে হয়? আমি কি আমার ইচ্ছেমত সময়ে ফ্রিল্যান্সিং করতে পারব না?

ফ্রিল্যান্সিং কি রাতেই করতে হয়? আমি কি আমার ইচ্ছেমত সময়ে ফ্রিল্যান্সিং করতে পারব না?

একটা টপিক খুজছিলাম কিছু লেখার জন্য, গ্রুপে প্রশ্নটা পেয়ে ভাবলাম এটা নিয়েই কিছু লিখি। তবে আপনি যদি অলরেডি একাধিক আলাদা টাইমজোনের ক্লায়েন্ট এর সাথে কাজ করে থাকেন তাহলে এই পোষ্টে আমি কি লিখতে যাচ্ছি আপনি জানেন, আপনি এটা স্কিপ করতে পারেন 🙂

যাই হোক, উত্তরটা হচ্ছে, না! ফ্রিল্যান্সিং রাতেই করতে হবে এমন কোন বাধ্যবাধকতা নেই। আপনি চাইলে আপনার পছন্দ মত সময়েই ফ্রিল্যান্সিং করতে পারেন।

– কিভাবে??

– টার্গেটিং!

হ্যা! উত্তরটা হচ্ছে, আপনি আপনার পছন্দমত সময়ের ক্লায়েন্ট টার্গেট করে কাজ করলেই আপনি আপনার ইচ্ছে মত টাইমে কাজ করতে পারেন।

কি? ক্লিয়ার না? আচ্ছা সহজ করে দিচ্ছি। তবে তার আগে আমার করা একটা ভুলের বিষয়ে বলে নেব।নতুন অবস্থায় আমাদের প্রধান টার্গেট থাকে কাজ পাওয়া, যে কোন উপায়ে একটা কাজ পেলেই হল। যেমন আমার হয়েছে। প্রধান লক্ষ্য ছিল কাজ পাওয়া, একটা কাজ পেলেই হল, কে ক্লায়েন্ট, কোথার ক্লায়েন্ট কোন কিছুই কেয়ার করতাম না। সেখানেই ভুলটা করে ফেলেছিলাম। ফলশ্রুতিতে হয়েছে কি, আমার ৭০% ক্লায়েন্ট আমেরিকার, আর বাকি ৩০% অস্ট্রেলিয়া, ইউনাইটেড কিংডম এসব দেশের। টপিকে ফিরি, টাইমজোন সম্পর্কে যদি আপনি এখনো ক্লিয়ার না হয়ে থাকেন তাহলে একটু গুগলে সার্চ করে দেখবেন,

1. Bangladesh is 11 hours ahead of Washington, DC, USA:

মানে হচ্ছে আমেরিয়ার সাথে আমাদের টাইম ডিফারেন্স ১১ ঘন্টা, সুতরাং তাদের যখন দিন আমাদের তখন রাত। সুতরাং ক্লায়েন্ট আমাকে দিয়ে কাজ করাতে তো রাত জাগবে না, বাধ্য হয়ে তাদের দিনকেই আমার দিন বানিয়ে ফেলতে হয়েছে তাদের সাথে কাজ এবং সময় মত যোগাযোগ রক্ষা করার জন্য। [Tip: আপনি আপনার ক্লায়েন্ট এর সাথে যত ভালভাবে যোগাযোগ রাখবেন, আপনার একটা প্রজেক্ট তত ভালভাবে শেষ হবে। সুতরাং হ্যাপি ক্লায়েয়েন্ট = পজিটিভ ফীডব্যাক। আর প্রতিটি পজিটিভ ফীডব্যাক মানেই আপনি এক ষ্টেপ সামনের দিকে এগিয়ে গেলেন]

2. Canberra ACT, Australia is 5 hours ahead of Bangladesh:

তার মানে হচ্ছে অস্ট্রেলিয়া আমাদের থেকে ৫ ঘন্টা আগে, সুতরাং আমরা যদি খুব সকালে (ভোর ৫ টা) উঠি, তাহলে অষ্ট্রেলিয়ান ক্লায়েন্ট (তাদের সকাল ১০ টা) দের সাথে দিন শুরু করতে পারি। সুতরাং রাত জাগার প্রয়োজন ই পরে না।

3. Bangladesh is 6 hours ahead of United Kingdom:

এদিকে, আমরা আবার ইংল্যান্ড এর থেকে ৬ ঘন্টা এগিয়ে, সুতরাং, তাদের যখন সকাল ৭ টা, আমাদের দেশে তখন দুপুর ১ টা। সুতরাং আপনি যদি শুধুমাত্র ইংল্যান্ড এর ক্লায়েন্ট টার্গেট করেন তাহলে আপনি দুপুর একটা থেকে বাকি দিন তাদের সাথে ভালভাবে যোগাযোগ রেখে কাজ করতে পারবেন।

আশা করছি আপনি পয়েন্ট গুলো বুঝতে পেরেছেন, এরকম আরো অনেক দেশ আছে যাদের টাইমজোন আমাদের টাইমজোনের কাছাকাছি, আপনি যদি তাদের সাথে কাজ করেন তাহলে আপনাকে আর রাত জেগে কাজ করতে হবে না। আমি ওপরের তিনটা উদাহরন হিসেবে দিলাম কারন এই সব দেশ থেকে প্রচুর কাজ পাওয়া যায়।

এবার আপনি বলবেন, এত সহজ নিজের ইচ্ছেমত সময়ে কাজ করা? আমি বলব, না! সহজ না। কোন কিছুই সহজ না, সহজ হলে তো সবাই ফ্রিল্যান্সিং ই করত আর লক্ষ লক্ষ টাকা আয় করত। এখানে আপনাকে সময় দিতে হবে, যেখানে আপনি মাসে ৫ টা কাজ পেয়ে ক্যারিয়ার শুরু করতেন সেখানে মাসে ১-২ টা কাজ পাবেন। কিন্তু যখন আপনার কয়েকজন পার্মানেন্ট ক্লায়েন্ট হয়ে যাবে তখন দেখবেন আসলেই সোজা। তবে ফ্রিল্যান্সিংয়ে দিনে কত ঘণ্টা সময় ব্যয় করবেন তা নির্ভর করবে সম্পুর্ন আপনার নিজের ওপর।

সবথেকে বড় কথা হচ্ছে আপনাকে অবশ্যই নিজের কাজ ভালভাবে জানতে হবে, যদি আপনি কাজ ভাল পারেন তাহলে যে কোন দেশের ক্লায়েন্ট এর সাথে কাজ করতে পারবেন।

এবার আসি আমি কখন কাজ করি,

১. আমি আগেই বলে নিয়েছি যে আমার ৭০% ক্লায়েন্ট আমেরিকা থেকে, ভাল যোগাযগের স্বার্থে আমি তাদের টাইমজোন ফলো করি, অর্থাৎ রাতে কাজ করি।

২. যেহেতু আমার অন্যান্য অনেক ফ্রীল্যান্স্যারদের মত আমার কাজ করার যায়গা আমার বাসায়, তাই দিনে নানা ধরনের সমস্যা হয়, লোকজন, কথাবার্থা ইত্যাদি। রাতে এই সমস্যা টা খুব একটা হয় না, নিরিবিলি একটা পরিবেশে কাজ করতে পারি। তাই আমি রাতে কাজ করি।

তবে যদি রাতে কাজ করেন তাহলে অবশ্যই স্বাস্থের দিকে খেয়াল রাখবেন, দিনে পর্যাপ্ত ঘুমাবেন, বেশি করে পানি পান করবেন, সাক সবজি বেশি খাবেন এবং অবশ্যই কিছু ফ্রীহ্যান্ড এক্সারসাইজ করবেন শরীর ঠিক রাখার জন্য। যদি আমার লেখা আপনার কাছে ভাল লাগে এবং আপনি চান আমি পরবর্তী টপিক নিয়ে লিখি, জানাবেন এবং যদি এই পোষ্ট সম্পর্কে আপনার কোন প্রশ্ন থাকে তাহলে অবশ্যই কমেন্ট বক্সে জিজ্ঞেস করবেন।

– রিয়াদ

Related Post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *